অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে টানা চতুর্থ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ডিসেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় ৪৬৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৭২ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতের শক্তিশালী অবস্থানই এ প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ডলার, যা মোট রপ্তানির ৮১ শতাংশ। নিট পোশাক খাত থেকে আয় এসেছে ১ হাজার ৮৩ কোটি ডলার এবং ওভেন পোশাক থেকে ৯০৫ কোটি ডলার। ডিসেম্বরে এ খাতে রপ্তানি আয় ১৭.৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বড়দিন, ব্ল্যাক ফ্রাইডে এবং ইংরেজি নববর্ষের মতো উৎসবগুলোতে ক্রেতাদের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে রপ্তানি আয় বেড়েছে। এছাড়া, শ্রমিক অসন্তোষের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, “রপ্তানির প্রবৃদ্ধি মানে আমাদের কার্যাদেশ বেড়েছে। বর্তমানে আমাদের কারখানাগুলো পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করছে।”
অপরদিকে অন্যান্য খাতেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে গত চার মাসে। শুধু পোশাক খাত নয়, কৃষিপণ্য, চামড়াজাত পণ্য এবং টেক্সটাইল খাতেও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
কৃষিপণ্য রপ্তানি:ডিসেম্বরে ১৪.৪১ শতাংশ বেড়ে ১০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। চামড়াজাত পণ্য: ২৪.১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আয় দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ডলার। টেক্সটাইল: ২০.৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। পাট ও পাটজাত পণ্য: সামান্য ১.৪৭ শতাংশ বেড়ে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।
পশ্চিমা দেশগুলোতে খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রেতারা কম দামে পণ্য কিনতে চাইছেন, যা রপ্তানিকারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তবুও, আগামী মাসগুলোতে অর্ডারের প্রবাহ বজায় থাকবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এনভয় টেক্সটাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ জানান, “আমরা ডিসেম্বর মাসে ১০০ শতাংশ সক্ষমতায় কাজ করেছি। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অর্ডারের নিশ্চয়তা রয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকেও পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস পেয়েছি।”
রপ্তানি খাতে টানা চার মাসের এই প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক দিক। তবে ক্রেতাদের চাহিদা এবং বাজারের প্রতিযোগিতা মাথায় রেখে রপ্তানিকারকদের নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply