ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় মিঠা পানিতে কোরাল মাছ চাষ করে সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন মৎস্য চাষীরা। নদীর পোনা সংগ্রহ করে পুকুরে কোরাল মাছ চাষ করে স্থানীয় চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ সফলতা দেখে অন্যান্য মৎস্য চাষীরাও কোরাল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে উপজেলার ২০-৩০ জন চাষী ছোট-বড় পরিসরে কোরাল মাছ চাষ করছেন।
২০ বছরের অভিজ্ঞতায় নতুন উদ্যোগ
চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মৎস্য খামারী মিজানুর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছেন। বর্তমানে দুটি পুকুরে কোরাল মাছ চাষ করছেন। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং পরিবার উন্নয়ন সংস্থার (এফডিএ) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় তিনি এ চাষ শুরু করেন। মিজানুর বলেন, “প্রথমে নদী থেকে পোনা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করি। আট থেকে নয় মাসের ব্যবধানে প্রায় ১ লাখ টাকার কোরাল বিক্রি করতে পারি।”
তিনি আরও জানান, পোনা সংগ্রহের পর নেটে আটকে ডিমের কুসুম খাওয়ানোর মাধ্যমে তাদের শক্তি বাড়ানো হয়। ফলে মিঠা পানিতে চাষ করলেও মৃত্যুহার কম থাকে। এছাড়া খাবার হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ দেওয়া হয়।
ভেটকি মাছ চাষে রোগবালাই কম, লাভ বেশি
হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মৎস্য চাষী মেহেদী হাসান বলেন, “ভেটকি (কোরাল) মাছ চাষে তেমন কোনো রোগবালাই হয় না। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও খাবারের নিশ্চয়তা থাকলে এ মাছ চাষে খুব ভালো লাভ করা যায়। চরফ্যাশনে বাজারজাতকরণের ভালো ব্যবস্থা থাকায় বিক্রি করতেও সমস্যা হয় না।”
প্রশাসনের সহায়তা ও পরামর্শ
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, কোরাল মাছ চাষে চাষীদের আগ্রহ বাড়াতে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ মাছ চাষে সফলতার হার বেশি এবং বাজারমূল্যও ভালো। ফলে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ অর্জন সম্ভব।
চরফ্যাশনের মিঠা পানিতে কোরাল মাছ চাষের এই উদ্যোগ এলাকাবাসীর কাছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। স্থানীয়দের মতে, সঠিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে এই চাষ পদ্ধতি আরও জনপ্রিয় হবে।
Leave a Reply